কক্সবাজার শহরে সমুদ্র সৈকতের পাশে হোটেল-মোটেল জোনে অবস্থিত ৯০ একর আয়তনের বিশাল একটি পাহাড়। দুই’শ ফুট উচুঁ নয়নাভিরাম এ পাহাড়টির মালিক সরকার। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে এ পাহাড়টির অর্ধেক জমি দখল করে অবৈধ ভাবে তৈরী করছে আবাসন প্রকল্প। ৪০ বর্গফুট আয়তনের একেকটি প্লট দুই থেকে তিন লাখ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে ‘লাইট হাউজ পল্লী সমবায় সমিতি’র নামে। গত তিন মাসে পাহাড়ের বিভিন্ন প্লটে ৫০টির বেশি ছোট টিনের ঘর তৈরি করা হয়েছে। এসব স্থাপনা তৈরীতে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাহাড়ও।
অভিযোগ উঠেছে, পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের কয়েক জন কর্মকর্তাকে ‘ম্যানেজ’ করে এই আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলেছেন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি।
গতকাল রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের সুগন্ধা পয়েন্টের পূর্ব পাশে সৈকতপাড়া পাহাড়ের বিশাল অংশ কেটে সমতল করা হয়েছে। সেখানে তৈরি হয়েছে অসংখ্য টিনের ঘর। অধিকাংশ ঘরে বসতি স্থাপন করেছে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা পরিবার। কৌশলে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে পানির সমস্যা দূর করতে লাখ টাকা খরচ করে বসানো হয়েছে গভীর নলকূপ। একটি টিনের ঘর ভাড়া নেওয়া একজন রোহিঙ্গা (নিজেকে আব্দুস সালাম নামে পরিচয় দিয়েছেন) বলেন, গত এক মাসে পাহাড়ের বিভিন্ন অংশ কেটে ৫২টি টিনের ঘর তৈরি করা হয়েছে। পাহাড় কাটার জন্য অনেক রোহিঙ্গাকে এখানে থাকতে দেওয়া হচ্ছে।
আরেকটি ঘরে থাকছেন মো.হামিদ নামের এক রোহিঙ্গা। কেয়াটেকার হিসাবে তাকে এ ঘরে রেখেছেন মোবারক নামের এক ব্যাক্তি।
এ পাহাড়ে নিজের কয়েকটি প্লট থাকার কথা স্বীকার করে মোবারক বলেন, ‘৭৮ জন সদস্য নিয়ে লাইট হাউজ পল্লী সমিতিটা করেছি, এখন নিজের মতো করে সমিতির সদস্যরা প্লটে কাজ করছেন। তবে এ সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান সব কিছু সমন্বয় করেন বলে তিনি জানান।’
পাহাড়ের আরেকটি ঘরের বাসিন্দা (কামাল উদ্দিন নামে নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন) বলেন, জমির দখলস্বত্ব ঠিক রাখতে অস্থায়ীভাবে টিনের ঘর তৈরি করা হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এ আবাসন প্রকল্পের বিষয়ে জানেন।
তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বন্দর রক্ষা কমিটির কক্সবাজারের সদস্য সচিব কলিমুল্লাহ বলেন,‘ প্রকাশ্যে দিনে দুপুরে সমুদ্রতীরের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকার পাহাড় কেটে প্রায় এক’শ টির উপরে টিনের ঘর তৈরি করা হয়েছে। অথচ পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন নীরব। আমরা মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ করেও ফল পাচ্ছি না। কারণ পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই সরকারি পাহাড় কেটে সাফ করা হচ্ছে।’
অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব বলেন, ‘সরকারি পাহাড় কেটে আবাসন প্রকল্প হচ্ছে ঠিক, তবে জেলা প্রশাসন, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশ অধিদপ্তর সমন্বয়ের মাধ্যমে পাহাড় কাটা বিরোধী নিয়মিত অভিযান হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এ পাহাড়েও অভিযান হবে।’
লাইট হাউজ পল্লী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, ‘কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন পাহাড় কেটে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া ১০ লাখ রোহিঙ্গা উখিয়া-টেকনাফে পাহাড় কেটে বসতি তৈরী করছে, তাদের তো কেউ উচ্ছেদ করে না। আমরা মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে এই পাহাড়ে ঘরবাড়ি করছি। এখন উচ্ছেদ করলে করার কিছু নাই।’
আবদুর রহমান বলেন, ‘লাইট হাউস পল্লি সমবায় সমিতির সদস্যদের জন্য আবাসন প্রকল্পটি গড়ে তোলা হচ্ছে। প্লটে টিনের ঘর তৈরি করার সময় পাহাড়ে সামান্য ড্রেসিং করেছে প্লট মালিকরা।’
পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতাদের দাবি, গত এক বছরে শহরের লাইট হাউস, কলাতলী, লারপাড়া, পাহাড়তলী, এবিসিঘোনা, সার্কিট হাউস, বাইপাস সড়কের পাশের ১১টি পাহাড় কেটে অন্তত তিন হাজার ঘরবাড়ি তৈরি হয়েছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য আন্দোলন হলে দখলদারদের বিরুদ্ধে দায়সারা মামলা ও নোটিশ দিয়েই দায় সারে পরিবেশ অধিদপ্তর।
ইয়ুথ এনভায়রণমেন্ট সোসাইটি ( ইয়েস) কক্সবাজারের সভাপতি ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সরকারি পাহাড় কেটে আবাসন পল্লি ও ঘরবাড়ি তৈরি করার বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এতে গাছপালা উজাড়ের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে কক্সবাজার সৈকতের ঝিলংজা মৌজার পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন উচ্চ আদালত। সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই এখন সেখানে পাহাড় কেটে তৈরি হচ্ছে রাস্তা, প্লট ও অবৈধ ঘরবাড়ি।
জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিদিন পাহাড় থেকে ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এখন উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পাহাড়ে কারা আবাসন প্রকল্প করছে, তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কেউ জড়িত থাকলে তাঁদেরও জবাবদিহি করতে হবে।’###
- চকরিয়ায় ৪৬টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি
- চকরিয়ায় ইট বোঝাই ডাম্পার ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে ভন্ড বৈদ্যের আবির্ভাব
- বৈষম্য মূলক নিয়োগে ফুঁসে উঠেছে চৌদ্দ হাজার সিএইচসিপি!
- কক্সবাজারে যোগ হচ্ছে রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার :
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে চকরিয়ায় মানববন্ধন
- চাঁদাদাবী, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যান ইউনুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
- কক্সবাজার আদালতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর যৌতুকের মামলা!
- তামাকের ব্যবহার কমাতে শক্তিশালী কর পদক্ষেপ ও আইনের বিকল্প নেই
- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে চকরিয়ায় মানববন্ধন
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- কক্সবাজারে যোগ হচ্ছে রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার :
- চকরিয়ায় পুকুরে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে দুই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু
- তামাকের ব্যবহার কমাতে শক্তিশালী কর পদক্ষেপ ও আইনের বিকল্প নেই
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- চাঁদাদাবী, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যান ইউনুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
- চকরিয়ায় ইট বোঝাই ডাম্পার ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে ভন্ড বৈদ্যের আবির্ভাব
- চকরিয়ায় ৪৬টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি
- কক্সবাজার আদালতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর যৌতুকের মামলা!
পাঠকের মতামত: